বিগত কয়েক দিন ধরে আর্মেনিয়ার বিরুদ্ধে ব্যাপক সাফল্য পাওয়ায় রাতভর ক্রমেই অগ্রসর হয়েছে আজারবাইজানের বাহিনী। সারারাত ধরে গোলাগুলি আর কামানের শব্দ পাওয়া গেছে।
আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ৬ অক্টোবর রাতে আর্মেনিয় বাহিনীর ৫ম রেজিমেন্টের ঘাঁটিতে আর্টিলারি হামলা চালায় আজারি বাহিনী। এতে তাদের প্রতিরক্ষা ঘাঁটি ধ্বংস হয়। এতে অনেক আর্মেনিয় সেনা নিহত হয়েছেন বলে জানায় আজারবাইজান।
এসব আজারবাইজানের সেনাবাহিনী আর্মেনীয়দের একটি ট্যাঙ্ক এবং তিনটি কামানও ধ্বংস করে।
আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরো জানায়, আর্মেনীয়ার প্রথম রেজিমেন্টে খাদ্য সরবরাহ নিয়ে গুরুতর সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। যার ফলে, অনেক আর্মেনিয়ান সেনা যুদ্ধ থেকে পালিয়ে যায়।
এছাড়াও অন্যান্য রেজিমেন্টে গোলাবারুদ, জ্বালানী ও খাদ্য সমস্যা দেখা দিয়েছে দাবি করে আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবী, ভুল তথ্যের কারণে আর্মেনিয় সেনাদের একদল অপর দলের উপর গুলি চালিয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছে।
এদিকে আজারবাইজানের সামরিক বাহিনী নাগানো-কারাবাখের গুরুত্বপূর্ণ জাব্রাইল জেলা মুক্ত করার পর একই জেলার শিখালী আগালি, সারিজালি এবং মেজ্রে নামক তিনটি গ্রাম আর্মেনিয়ান বাহিনীর কাছ থেকে মুক্ত করেছে বলে এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহান আলিয়েভ।
এর আগে আরো ২২ এলাকা আর্মেনিয় দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত করে বলে জানায় তুর্কি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। হামলা নিয়ে দুই পক্ষের পাল্টা দাবিতে সঙ্কট আরো বাড়ছে। যুদ্ধ দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়ালেও বিতর্কিত নাগার্নো-কারাবাখ নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে লড়াই থামার কোন লক্ষণ নেই। এরই মধ্যে ৩০০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন।
সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর থেকেই এই অঞ্চলে দুই দেশের বিরোধ চলছে। ১৯৯০ এর দশকে আর্মেনিয়ান নৃগোষ্ঠী আজারবাইজানের কাছ থেকে কারাবাখ দখল করে। এ নিয়ে সঙ্ঘাত ছড়িয়ে পড়ে সে সময়ই। শুরু হয় যুদ্ধ, যাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ হাজার মানুষ। ১৯৯৪ সালে দুই পক্ষের মধ্য যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সরাসরি সঙ্ঘাতের ইতি ঘটলেও এ নিয়ে দুই দেশের বিবাদ অব্যাহত ছিল। নিজেদের অঞ্চল আবার দখলে বেশ কয়েকবারই হুমকি দিয়েছে আজারবাইজান।
Leave a Reply